বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদ:
সাংবাদিক দেখলেই চোখ-মুখ লাল হয়ে যায় বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এমন প্রতিক্রিয়ার পেছনে কি রয়েছে কোনো গোপন ভয়? নাকি 'থলের বিড়াল' বেরিয়ে যাওয়ার আতঙ্কই তাদের এতটা অসহিষ্ণু করে তুলেছে? প্রশ্ন উঠছে—সাংবাদিকদের সঙ্গে এই শত্রুতা কেন?
সম্প্রতি বেনাপোল প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বহিরাগত প্রবেশকারীদের কাছ থেকে ‘প্রবেশ পাশ ফি’ নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগে সরগরম হয়ে উঠেছে স্থানীয় মহল। কেউ টার্মিনালে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে একটি ফর্ম পূরণ করতে হয় এবং দিতে হয় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা। প্রশ্ন হলো, এই টাকা কোথায় জমা হয়? কার একাউন্টে যায়? সরকারি কোনো নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন ছাড়াই কেন এমন ‘চাঁদা’ আদায় চলছে?
এর চেয়েও আশ্চর্যের বিষয়, ১ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত ঠিক কত টাকা উঠেছে, সেই হিসাবও দিতে পারেননি টার্মিনালের ফ্রন্ট ডেস্কে কর্মরত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী। তাহলে কি এই অর্থ সরাসরি চলে যাচ্ছে কোনো ‘উর্ধ্বতন কর্তার’ পকেটে?
এই বিষয়ে বেনাপোল স্থল বন্দর এর এ ডি মামুন কবির তরফদার কে মুঠোফোনে কল করলে তিনি জানান, বহিরাগত দের কাছ থেকে এভাবে ফরম লিখিয়ে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তিনি আরো বলেন হয়তো বন্দর পরিচালক এই নিয়ম করতে পারে আমার জানা নেই।
যেখানে জনগণের জানার অধিকার, সেখানে তথ্য গোপন করে কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে বন্দর প্রশাসন? কোনো স্বচ্ছতা নেই, কোনো জবাবদিহিতা নেই—তবে কি এই চাঁদাবাজি চলছে উচ্চপর্যায়ের ছত্রছায়ায়?
একাধিক সূত্র বলছে, প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তারা জানেনই না কোন নিয়মে, কাদের নির্দেশে এবং কেন এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রতিদিন অজস্র মানুষ এই পথে যাতায়াত করছেন এবং তাদের পকেট কেটে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
এ বিষয়ে একজন বন্দর ব্যবহারকারী বলেন, “ভেতরে ঢুকতে গেলেই টাকা, অথচ কোনো কাগজপত্র, সরকারি ঘোষণা কিছুই নেই। এটা যদি চাঁদাবাজি না হয়, তাহলে কী?”
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, এই অব্যবস্থাপনার প্রশ্ন তুলতে গেলেই সাংবাদিকদের টার্মিনালে প্রবেশে আরোপ করা হয় কঠোর বিধিনিষেধ। একটাই প্রশ্ন—সাংবাদিকদের কেন ভয়?
স্থানীয়দের দাবি, বিষয়টি এখনই তদন্ত না করলে এই ‘ঘোষণাবহির্ভূত আয়ের উৎস’ আরও বিস্তৃত আকার নিতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ