শার্শা-যশোর প্রতিনিধি:
যশোরের শার্শা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র না মেনে বড় অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রভাতী সংঘ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠণ বিতর্কদের দখল করিয়ে দিতে, সহযোগীতার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক কমিটির সকল সদস্য,সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুধী সমাজের। তবে তৌহিদুর রহমান জানিয়েছেন কমিটির অনুমোদন করিয়ে নিতে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল বিধায় নিরুপায় হয়ে কমিটি অনুমোদন দিয়েছি ।
এর আগে গত ৫ ই আগস্টের পর ২১ শে সেপ্টেম্বর গভির রাতে ইমদাদ ও তার দলবল নিয়ে প্রভাতী সংঘ দখল করে সংঠনটিতে রাজনৈতিক নেতাদের ছবি লাগিয়ে দেয়। পরের দিন প্রভাতী সংঘের সদস্যদের অভিযোগে ও প্রতিবাদে ২২ সেপ্টম্বর প্রথম আলোসহ দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে লেখালেখি হয়। এতে বাধ্য হয়ে ক্লাবের দখল ছেড়ে, সেখান থেকে রাজনৈতিক নেতাদের ছবি খুলে ফেলে ইমদাদ। তবে ক্লাবের দখল করতে এবার মরিয়া হয়ে নতুন ফন্দী আটে। উল্লেখ্য সাবেক কমিটির নিকট সংগঠনটির যাবতীয় মূল কাগজ প্রত্র সংরক্ষণ থাকাশত্ত্বে ও কি ভাবে নাম মাত্র কাগজ পত্র জমা দিয়ে শার্শা ও যশোর সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ ক্রে, বড় অংকের ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে কমিটির অনুমোদন করিয়ে নেয়। বিতর্কিত কমিটিতে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক দাবি করে ফেসবুকে তাদের ছবি পোষ্ট দেয় তার অনুসারীরা। উক্ত পোস্ট দেখার পর বিগত কমিটির সদস্যসহ সাধারণ সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে ঐ দিনেই সকলে সেখানে উপস্থিত হয়।
শার্শা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের নিকট সরাসরি বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি ঘুষ গ্রহনের কথা অস্বিকার করেন। গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সব দাখিল করেছেন কিনা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। কোন চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অসহায় ও নিরুপায় ছিলেন।
প্রভাতী সংঘের পূর্বের কমিটির সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, নতুন কমিটিতে পুরাতন কমিটির একটি সদস্য ও অন্য কনো সাধারণ সদস্যর নাম নাই সেখানে এছাড়া অধিকাংশ সমাজের বিতর্কীত মানুষ। এরা পূর্বের কমিটির কোন সদস্য না হয়েও কমিটি অনুমোদন নিতে কাগজ পত্র কোথা থেকে কিভাবে পেল এটা একটি প্রশ্নবিদ্ধ? এ ধরনের একটি বিতর্কিত কমিটি ঐতিহ্যবাহী (সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী) সংগঠনের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন করবে। যার দীর্ঘ ৫৪ বছরের সুনাম এখনো পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ রয়েছে। ১৯৭১ শালের পরবর্তী বছরে এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে, স্থাপিত:১৯৭২ ইং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সংগঠনের সদস্য কারা আছেন এবং কারা এখানে নেত্রীত্বে আছেন। সেটা যাচাই বাচাই না করে কমিটির অনুমোদন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
বেনাপোল পৌর ছাত্রদলের আহবাহক আরিফুল ইসলাম জানান, এমন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন প্রভাতী সংঘ কিভাবে সমাজের বিতর্কিতদের দিয়ে গঠন হলো বিষয়টি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি অনুতপ্ত হয়ে বলেন, হুমকি দিয়ে কমিটির অনুমোদন করিয়ে নিয়েছে তারা। ছাত্র নেতা আরিফ আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি নাজিব হাসানকে ফোন দিয়ে কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনিও জানিয়েছে, এ কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইউএনওকে জানিয়েছেন তাকে ভয়,ভীতি দেখিয়েছিল নতুন কমিটির লোকজন।
যায়যায় দিন পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি জি এম আশরাফ জানান, বিগত দিনে যারা প্রভাতী সংঘের সাথে জড়িত ছিল তারা সবাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। এবার এ কমিটিতে অধিকাংশই বিতর্কীত।এ কমিটি সম্পর্ক্যে আগে থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা গণমাধ্যম কর্মীরা কেউ জানতে পারলেন না। সমাজ সেবা কর্মকর্তাদের এমন একটি কমিটি অনুমোদন প্রশ্নবিদ্ধ।
শার্শা উপজেলা ছাত্র দলের আহবাহক শরিফুল ইসলাম চয়ন ও পৌর যুবদলের আহবাহক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, গঠন তন্ত্র না মেনে বিতর্কীত এই কমিটি যদি দ্রুত বাতিল না করে তবে সমাজ সেবা কর্মকর্তার অনিয়মের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানানো হবে।
0 মন্তব্যসমূহ