Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

নীরব সফর: বেনাপোলে রেল মহাপরিচালক এলেন, দেখলেন, কিছু না বলেই চলে গেলেন



বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদ:

বেনাপোল রেলস্টেশনে হঠাৎ করেই হাজির হলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন।তিনি আওয়ামী শাসনামলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার সাথে ছিলেন রেলের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা। পরিদর্শন করলেন স্টেশন ভবন, ওয়াশপিট—দেখলেন ভাঙাচোরা অবকাঠামো, নোংরা পরিবেশ। কিন্তু তারপর যা ঘটল, তা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে সাংবাদিক মহলে।

সফরের পুরো সময়জুড়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা রেলসেবার দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং যাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মহাপরিচালক ব্যস্ততার অজুহাতে কোন বক্তব্য না দিয়েই দ্রুত বেনাপোল ত্যাগ করেন। 

এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বক্তব্য,

“সরকারি কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চললে, স্বচ্ছতা কোথায় থাকবে?” 

অনেকের ধারণা, রেলপথে চোরাচালান ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশ নিয়ে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন বুঝেই তিনি কোনো মন্তব্য না করে চলে যান। বিশেষ করে বেনাপোল রেলস্টেশন দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার জন্য আলোচিত।

অভিযোগ রয়েছে, পণ্যবাহী ট্রেনে নিয়মিতভাবে পণ্য চোরাচালান হয়, অথচ রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যায়।

ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় সাংবাদিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে রেলওয়ের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলছেন,

"আমরা প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের মুখোমুখিই হলেন না। এটি স্পষ্টত গণমাধ্যমকে অবমূল্যায়ন করা।"

রেলস্টেশনটির অবকাঠামো জরাজীর্ণ, ওয়াশপিট অকেজো। যাত্রীসেবার মান আশঙ্কাজনকভাবে নীচু। রেলপথে যাত্রীদের পাশাপাশি চোরাকারবারিদের যাতায়াত নিয়মিত। অথচ এসব নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের।

রেল মহাপরিচালকের এমন আচরণে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কি রেলওয়ে সরে যাচ্ছে? দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর সংযুক্ত রেলস্টেশনে এসে জনগণ ও সাংবাদিকদের উপেক্ষা করে চলে যাওয়া কি কেবল সময়ের অভাব, নাকি উদ্দেশ্যমূলক?

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যদি জবাবদিহিতার মুখোমুখি না হন, তবে কীভাবে দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর হবে? সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলে, প্রশ্ন কিন্তু থেমে থাকে না—বরং আরও জোরে উচ্চারিত হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ