
বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদঃ
দেশের অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীসেবার চরম অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তীব্র গরমের এই সময়ে পুরো ইমিগ্রেশন ভবনের অধিকাংশ ফ্যান ও এসি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে প্রতিদিন শত শত যাত্রীকে ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, যা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরাসরি ইমিগ্রেশন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শুধুমাত্র সিল ডেস্কের কয়েকটি ফ্যান সচল থাকলেও বাকি অংশে অধিকাংশ ফ্যান নষ্ট। এসিগুলোও দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। নেই কোনো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, নেই পানির সুব্যবস্থাও।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আগত পাসপোর্ট যাত্রী নুর উদ্দিন বলেন, “এখানে এসেই বুঝলাম আমরা কী অবস্থায় আছি। গরমে আমাদের কষ্টের শেষ নেই। সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই, বসার সুযোগ নেই, ফ্যান এসি কিছুই চলে না। এটা কি দেশের প্রধান স্থলবন্দর?”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করছেন?
গত ২০ মে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জামিল আহমেদকে ইমিগ্রেশন থেকে আটকের পরও বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের কিছু জানায়নি ইমিগ্রেশন ওসি ইব্রাহিম খলিল।পরে সাংবাদিকরা খবর পেয়ে সেখানে যাওয়ার সময় দেখা যায় তাকে থানায় হস্তান্তর এর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ওসির এমন নীরবতা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এ বিষয়ে যাত্রী পারাপারের পরিসংখ্যান জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই তথ্য বন্দরের চেয়ারম্যান জানেন , আমরা কিছু জানি না ।” অথচ যাত্রী পারাপার ও ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সঠিক তথ্য একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার কাছ থেকেই পাওয়ার কথা।
স্থানীয় যাত্রীরা বলছেন, বেনাপোলের ইমিগ্রেশন ও বন্দরের মধ্যকার অব্যবস্থাপনা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা আন্তর্জাতিক মানের চরম ব্যত্যয়। তারা অবিলম্বে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের প্রধান স্থলবন্দর হিসেবে বেনাপোলের সম্মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
0 মন্তব্যসমূহ