Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

সামান্য বৃষ্টিতেই জনদুর্ভোগ চরমে: উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত শার্শার শাঁখারীপোতা বাজার সড়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গন।



বেনাপোল প্রতিনিধি:

শার্শা উপজেলার ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের শাঁখারীপোতা বাজার সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই এই বেহাল দশা, যা এলাকার হাজার হাজার মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ধান্যখোলা থেকে শাঁখারীপোতা বাজারে প্রবেশের প্রধান এই রাস্তাটি যেন উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বহু দূরে।

নিত্যদিনের দুর্ভোগ ও জনজীবনের প্রভাব

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন শার্শা উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও শাঁখারীপোতা বাজারের প্রবেশপথে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে যায়। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এই জলাবদ্ধতা এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এবং আশেপাশের বহু গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বেরোলেই তাদের বাধ্য হয়ে এই নোংরা হাঁটু পানি মাড়িয়ে বাজারে যেতে হয়।

এলাকাটি শুধু একটি বাজার কেন্দ্রই নয়, এখানে একাধিক বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (যেমন - শাঁখারীপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল) এবং উপাসনালয় (যেমন - জামে মসজিদ) রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের রাস্তাগুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় শিক্ষার্থীরা যেমন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না, তেমনি নতুন ভর্তি ইচ্ছুক অনেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের এই জলাবদ্ধতা স্থানীয়দের মধ্যে পানিবাহিত রোগের প্রকোপও বাড়াচ্ছে।

চালক ও ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

রাস্তার বেহাল দশায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ইজি বাইক চালকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইজি বাইক চালক জানান, "রাস্তার এমন অবস্থার কারণে আমাদের গাড়িতে প্রায়ই নানান সমস্যা দেখা দেয়। দিনে ৫০০ টাকা উপার্জন করলে ৩০০ টাকা মালিককে ভাড়া দিতে হয়। অথচ এই রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করার কারণে কিছু দিন পরপরই ১০০০ টাকা গ্যারেজে গাড়ি ঠিক করতে চলে যায়।" এতে তাদের সীমিত আয়ে টান পড়ছে, যা পরিবার চালানো কঠিন করে তুলছে।

অন্যদিকে, বাজারের ব্যবসায়ীরাও চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। শাঁখারীপোতা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, "আমার দোকানের সামনে প্রায় হাঁটু পানি। হালকা বৃষ্টিতেই দিনের পর দিন পানি জমে থাকে। এতে আমার দোকানের কাস্টমার অনেকাংশে কমে গেছে। ব্যবসা এখন চরম ক্ষতির মুখে।" তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, "সারা দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসে, তখন শাঁখারীপোতা গ্রামের বাসিন্দারা সেই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।"

জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা ও আশাহীনতা

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই জলাবদ্ধতার বিষয়টি একাধিকবার মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সে সময়  কেবল সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছুই মেলেনি । শাঁখারীপোতা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাস্তা উঁচু করা অথবা সুষ্ঠু পয়োনিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হলে এই ভয়াবহ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে।

আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, মাত্র এক বছর আগেই শাঁখারীপোতা বাজারের এই রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের কথিত অবহেলা এবং সঠিকভাবে রাস্তা সংস্কার না হওয়ার কারণে হাজার হাজার মানুষ আবারও চরম দুর্ভোগের শিকার। তাদের প্রশ্ন, "আর কত অপেক্ষা করবে তাদের স্বপ্নের এই রাস্তাটির জন্য?" উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি যেখানে বাস্তবতার কঠোর মুখোমুখি, সেখানে শাঁখারীপোতা সহ আশেপাশের এলাকার মানুষ এই দুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি পাবে, তা এক বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


অন্যদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে যেন নদী বইছে, সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার এবং যাতায়াতের জায়গা টা পুরো পানিতে ভরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পানি পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে বলে অভিভাবক দের অভিযোগ । তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ