বেনাপোল প্রতিনিধি:
বেনাপোল কাস্টমস হাউস চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭০৫ কোটি টাকা। কিন্তু বছরের শেষ হিসেব অনুযায়ী আদায় হয়েছে ৭০২১.৫১ কোটি টাকা—যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬.৫১ কোটি টাকা বেশি।
এটি শতকরা হিসাবে ৪.৭২% বেশি। আগের বছরের তুলনায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধির হার ১৩.৮৫%, যা কাস্টমস হাউসটির জন্য একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
📉 আমদানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব
২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণ ছিল ১৪,৯৮,৮৯৮ মেট্রিক টন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮২ হাজার টন কম (মাইনাস ৫.২০%)। অথচ সেই তুলনায় রাজস্ব আদায় বেড়েছে প্রায় ৮১১ কোটি টাকা—প্রবৃদ্ধির হার ১৩.৫১%।
এছাড়া রপ্তানির পরিমাণও কমেছে। এ বছর ভারতমুখী রপ্তানি হয়েছে ৩,৮১,৪৪০.৭৭ মেট্রিক টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৪৪% কম। তবুও রাজস্ব বৃদ্ধির এই ধারা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।
🛠️ যে পণ্যগুলো থেকে বেশি রাজস্ব এসেছে
২০২৪-২৫ সালে কিছু নির্দিষ্ট আমদানি পণ্য থেকে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
তাজা ফল
-
ওভেন, কাপড়, অ্যালুমিনিয়াম
-
মোটর যন্ত্রাংশ, পিস্টন, ডিজেল ইঞ্জিন
-
ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ
-
ল্যাটিক্স, স্টিল পাইপ ও ব্লেড
যদিও বাণিজ্যিক পণ্যের আমদানি ৬২,৪৬৪.৩১ মেট্রিক টন কমেছে, তবুও এসব উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যের কারণে রাজস্ব বেড়েছে ৭৪৮.৯৬ কোটি টাকা.
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের ফলে ভারত থেকে সুতা আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে পাট ও গার্মেন্টস রপ্তানি কার্যত বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাণিজ্য প্রবাহে, তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে—এটি সাময়িক এবং রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি।
কমিশনার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, “যদিও সার্বিক আমদানির হার কমেছে, তবে আমরা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ১৩.৮৫% প্রবৃদ্ধি এনেছি। রাজস্ব ফাঁকি রোধে বেনাপোলে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ অনুসরণ করা হচ্ছে, যা এই সাফল্যের অন্যতম কারণ।”
0 মন্তব্যসমূহ